মেহেদী হাসান মামুন, যশোর
এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে গত বছর তলানিতে নেমে যাওয়া যশোর বোর্ড এবার একধাপ উপরে উঠেছে। তবে জিপিএ-৫ প্রাপ্তি সামান্য বাড়লেও কমেছে পাসের হার। এ বছর যশোর বোর্ডে পাসের হার ৬৪ দশমিক ২৯ ভাগ; জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৭৪৯ জন শিক্ষার্থী।
গত বছর যশোর বোর্ডে পাসের হার ছিল ৬৯ দশমিক ৮৮ ভাগ; জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৮ হাজার ১২২ জন শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত ফলাফলে যশোর বোর্ডের এ চিত্র উঠে এসেছে। বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, ইংরেজিতে অনুত্তীর্ণের হার বেড়ে যাওয়ায় বোর্ডের সার্বিক ফলাফলে এর প্রভাব পড়েছে।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডর চেয়ারম্যান প্রফেসর মর্জিনা আক্তার বলেন, এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় অবতীর্ণরা করোনা মহামারীর সময় ২০২০ ও ২০২১ সালে ৯ম ও ১০ম শ্রেণিতে অধ্যয়ন করেছে। তখন শ্রেণিকক্ষে তাদের পাঠদান সম্ভব না হওয়ায় তাদের ইংরেজিতে দুর্বলতা রয়ে গেছে। যা এখনও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। পরীক্ষার্থীদের ৩১ শতাংশ ইংরেজিতে অনুত্তীর্ণ হয়েছে। এই প্রভাব পড়েছে সার্বিক ফলাফলে। আগামীতে বোর্ডের ফলাফল ভাল করার জন্য তারা পদক্ষেপ নেবেন।
যশোর বোর্ডের প্রকাশিত ফলাফল থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় বোর্ড থেকে এক লাখ ২২ হাজার ৫১১ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৭৮ হাজার ৭৬৪ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৩৬ হাজার ২৪৭ জন এবং ছাত্রী ৪২ হাজার ৫১৭ জন। পাসের হার ৬৪ দশমিক ২৯। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৭৪৯ জন। বহিষ্কৃত হয়েছে ১৩ জন।
যশোর শিক্ষাবোর্ডের ১৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব পরীক্ষার্থী এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেছেন। অন্যদিকে, ৭টি প্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেননি।
শিক্ষাবোর্ড ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, শতভাগ পাসের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে যশোরের চৌগাছায় অবস্থিত এস এম হাবিবুর রহমান পৌর কলেজ। এই কলেজ থেকে এবার পরীক্ষায় অবতীর্ণ ১২৭ শিক্ষার্থীর সবাই পাস করেছেন।
এ ছাড়া খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার প্রতিষ্ঠান ইসলামাবাদ কলেজিয়েট স্কুলের ৬১, খালিশপুরের নেভি অ্যাঙ্কারেজ স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৫৯ এবং ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের ৪৭ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করেছেন।
শতভাগ পাসের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আরো রয়েছে যশোরের চৌগাছা উপজেলার হাকিমপুর মহিলা কলেজ (পরীক্ষার্থী সংখ্যা ২), নড়াইলের গোবরা মহিলা কলেজ (১), যশোরের কেশবপুরের তিতা বাজিতপুর এম কে বি মহিলা কলেজ (৩), ঝিকরগাছার বাঁকড়া হাজিরবাগ মহিলা আইডিয়াল কলেজিয়েট স্কুল (৯), খুলনার কয়রা উপজেলার হাড্ডা পাবলিক কলেজ (২), সাতক্ষীরা কমার্স কলেজ (৩), সাতক্ষীরা সদরের গোবরদাড়ি জরদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ (১), যশোরের চৌগাছা উপজেলার মাড়–য়া ইউসুপ খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ (৩২) এবং কুষ্টিয়া সদরের সুনুপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের (১৪) সব পরীক্ষার্থী পাস করেছেন।
অন্যদিকে, এবার যশোর বোর্ডের সাতটি প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেননি। এই প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, মেহেরপুরের মড়কা জাগরণ কলেজ, খুলনার মডেল মহিলা কলেজ, একই জেলার শাপলা কলেজ, সাতক্ষীরার আখড়াখোলা আইডিয়াল কলেজ, মাগুরার গোপীনাথপুর এম এ খালেক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, যশোরের নেঙ্গুড়াহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ঝিনাইদহের নাজির উদ্দিন ইসলামিয়া কলেজ। এই ৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১৮ জন এবারের পরীক্ষায় বসেছিলেন।