উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁঃ
নওগাঁ জেলায় -তিন পুরুষ গত পেশা গত না হলেও হারিয়েছে আগ্রহ। টিকিয়ে রাথার চেষ্টায় অবিচল নওগাঁর আত্রাই পাঁচুপুর ইউনিয়নের পালপাড়া এলাকার পাল সম্প্রদায়। এলাকার শুরু সময়ের একশত পরিবারে মধ্যে টিকেছে মাত্র ২৫ পরিবার। তাদের মধ্যেও কেউ গেছে অন্য পেশায়।
স্থানিয়রা বলছেন, এক সময় তৈজষপত্রের সবকিছু্ মাটির তৈরি ছিলো। কিন্তু তেমন দাম ছিলো না। ফলে অনেক কষ্টে জীবিকা নির্বাহ করতে হতো। এতে অনেকেই পরিবর্তনও করেছেন তাদের পেশা। এ ছাড়া অল্প সংখ্যক মানুষ এই পেশার সঙ্গে রয়েছে। তাদের বর্তমানে মাটির তৈজষপত্রের প্রচলন না থাকলেও মাটির তৈরি রিং(পাট) এর কদর বেশ বাড়ছে। এ গুলো বিক্রিতে বাজার সৃষ্টি হয়েছে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে।এতে করে বিক্রি নিয়ে সমস্যা নেই এই পালদের। বছরের ১০ থেকে ১১ মাস কাজ করতে পারে তারা।বৈশাখ মাস পুরো কাজ বন্ধ থাকে। আর বর্ষায় বৃষ্টির কারণে হয়ে উঠেনা কাজ করা জানিয়েছেন পালরা। তারা বলেন, মাটির তৈরি পাট প্রচীন আমলে কুয়ার (রিং) তৈরিতে ব্যবহার হতো। কুয়ার প্রচলন দিনে দিনে হারিয়ে যাওয়ায় মাটির পাট এখন বেশি কাজে লাগছে টয়লেট তৈরিতে। প্রতিদিন নওগাঁ, জয়পুরহাট, নাটোর, সিরাজগঞ্জ রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা এখান থেকে পাট কিনে নিয়ে যায় পাইকারি দরে। এলকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই প্রতিটি বাড়িতে মাটির কিছু না কিছু পণ্য তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। পালরা মাটির হাড়ি,টয়লেটের পাট(রিং) পূঁজার সামগ্রী,গরুর খাবারের চাড়ি(ন্যান)বানাচ্ছেন। এ ছাড়া তৈরি করা হচ্ছে মাটির সরাই,ঢ়ুকসাও। এলাকার শ্রী চন্দ্রপাল বলেন, দাদা, তিন পুরুষের দেখিয়ে যাওয়া পথ। এই পথেই গত হয়েছেন তারা। অন্য কাজও শিখিনি। যে করে খাবো।কষ্ট হলেও টিকিয়ে রেখেছি কাজ কে। তিনি বলেন, এই মৃৎ শিল্পের এখন পর্যন্ত মর্যাদা পেল না। বেশ ভালো আছেন তারা। বিলুপ্ত প্রায় এই পেশাটি বেশ যত্ন হিসেবে আগলে রেখেছেন মৃৎ শিল্পীরা।এলাকার ৫০ উর্দ্ধ নারী শ্রীমতি বাসন্তি বয়সের ভারে নুয়ে গেছেন। তিনি বলেন, এক সময় খেতে পাইনি। এখন তো অনেক ভালো।মাটির হাঁড়ি,রুটি তৈরির তাওয়া তৈরি করি। এখানেই বিক্রি হয়। নাটোর, নওগাঁ,জয়পুরহাট থেকে পাইকার ব্যবসায়ীরা আসে।তারাই নিয়ে যায়। জানা গেছে মাটির পাট গুলো একা তৈরি করা সম্ভব না।তাই দু’জন মিলে তৈরি করতে হয়। এ পাট ছাট, মাঝারি ও বড় মিলে এক সেট। যা তিনটা মিলে এক সেট ধরা হয়।তৈরি খরচ পরে ৬৫টাকা।পাটগুলো খরচা ১৮০টাকা।পাইকারি ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়। আর ছোট গুলো ২০ টাকা কমে বিক্রি হয় বলে জানান গনেশ চন্দ্র পাল।তিনি আরো বলেন, প্রতিমাসে চারটি ভাটা পুড়ানো হয়। একটি ভাটা থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকার পাট বিক্রি হয় সব মিলে খরচ হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা কালি পাল জানান,২০০০সালের দিকে আবার মাটির পাট(রিং) তৈরি শুরু করি। শুরুর দিকে তেমন চাহিদা না থাকলেও বর্তমানে ব্যাপক চাহিদা। মানুষ বুঝতে সক্ষম হয়েছে। এই পাটগুলো মাটিতে নষ্ট হয় না। ২০২০সাল থেকে থেকে ৩০ বছর পযন্ত।তার প্রমান হিসেবে দেখা যায় প্রাচীন সময়ের কুয়ার পাটগুলো।এই পাট তৈরিতে মাটি ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহার করা হয় না।তিনি আরো বলেন, াজশাহী,পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ থেকে পাইকারার ভ্যান বা ট্রাক নিয়ে আসেন।তারা এানে কিনে গাড়িতে তুলে নেয়।তা ছাড়া আগ থেকে অর্ডার আসে তাদের কাছে। পালরা জানান, বতমানে মাটি পাওয়া যাচ্ছে না। তাই দুর থেকে মাটি কিনে আনতে হয় এতে করে খরচের পরিমান বেড়ে যায়। এছাড়া অনেক সময় মাটি খনন করে আনতে দেয় না। কেউ পুকুর খনন করলে সেই মাটি কিনে নেন তারা। তবে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে।যেমন মাটি কাদা করা হচ্ছে মেশিনে। যে মেশিনের দাম৭০ হাজার টাকাএই মেশিন প্রায় সবার আছে।মাটির তৈরি পাট কিনতে আসা মকলেছুর রহমান বলেন, তিনি নাটোর থেকে এসেছেন এখানে পাইকারি দরে কিনবেন তিনি। এলাকায় তার স্যানিটারি সামগ্রী বিক্রির দোকান আছে। সেখানে তিনি বিক্রি করেন। পাটগুলো অনেক দিন মাটির নিচে থাকলেও নষ্ট হয় না। এর ফলে মানুষ সিমেন্ট এরপাট তেমন কিনছে না টয়লেটের কাজে। পাঁচুপুর ৪নং ওর্য়াড মেম্বার ওয়াদুদ খান বলেন,পালপাড়া এলাকাটি ব্রিটিশ আমল থেকে এখানেই আছে। পাল বংশের লোকজনদের জীবিকার মূল উৎস মাটির তৈরি বিভিন্ন পণ্য তৈরি ও বিক্রিকরা।এখানে বেশির ভাগ পরিবার স্বাবলম্বী।তারা এ কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন।
নওগাঁ।