মাহাবুবুর রহমান।
কালিগঞ্জ(ঝিনাইদহ)প্রতিনিধি।
ঝিনাইদহ কালিগঞ্জে প্লাস্টিকের ব্যবহার বাড়ায় হারিয়ে যাচ্ছে অতীতের বাঁশ বেতের শিল্পকলা, আর্থিক সংকটে শিল্পীরা। একসময় বাড়ির বেশিরভাগ জিনিসপত্রই বাঁশ বেত কিংবা কাঠের তৈরি উপাদান ছিল। বর্তমানে বাজারে বেড়েছে প্লাস্টিকের জিনিসপত্রের চাহিদা।
সময়ের পরিবর্তনে বাঁশ ও বেত শিল্পের জায়গা দখল করেছে প্লাস্টিক।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্রাচীন শিল্পের অন্যতম বাঁশ বেত শিল্প বিলুপ্তির পথে।
বর্তমানে প্লাস্টিকের তৈরি গৃহস্থের সরঞ্জাম তৈরি হওয়ায় বাঁশের তৈরি পণ্যের আর কদর নেই বললেই চলে।
এতে এসব কুটিরশিল্পের সঙ্গে জড়িতরা তাদের জীবিকার মাধ্যম হারাতে বসেছে।
ধুঁকছে অর্থনৈতিক সংকটেও।
এ কারণে অনেকে তাদের পেশাও বদল করেছেন।
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশ থেকে চটা বের করে নিপুণ হাতের কারুকাজে স্বপ্ন বুনছেন ঋষি সম্প্রদায়ের কৃষ্ণ দাস, প্রভাস দাস, রানী দাস। কৃষিনির্ভর এলাকাটিতে তারা বারোমাসই এই পণ্য তৈরি করেন।
এতে তারা বর্তমানে শ্রমের দাম না পেলেও বংশপরম্পরায় বাঁশের পণ্য বানানোই তাদের নেশা।
তাই এখনও কুটিরশিল্পের এই কাজটি তাদের করতে দেখা গেছে।
ঋষি সম্প্রদায়ের কৃষ্ণ দাস, রানী দাস বলেন,
যুগ যুগ ধরে বাঁশের কুলা-ডালা ও চালনসহ নানা ধরনের পণ্য নিজেদের হাতে তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলাম আমরা। কিন্তু বাজারে প্লাস্টিকের পণ্যের দাম কম হওয়ায় এবং বাঁশের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের তৈরি পণ্যের কদর দিন দিন কমে যাচ্ছে। বর্তমানে অনেক পরিবার শখ করে বাঁশ দিয়ে তৈরি কিছু পণ্য গৃহস্থালির কাজের ব্যবহার করছেন, তাই এখনো এ শিল্পীটি টিকে আছে।
এ অবস্থায় আমরা তেমন ভালো নেই। খেয়ে না খেয়ে আমাদের জীবন চলছে। সরকার যদি আমাদের পুঁজি ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে আমরা অন্য ব্যবসা করে একটু ভালোভাবে চলতে পারব।
সারা দেশে এমন অনেক মানুষ আছে যারা এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে প্লাস্টিকের ভিড়ে তারা তাদের জীবিকার একমাত্র বাহন হারাতে বসেছে।
কেউ কেউ অন্য পেশায় যেতে পারলেও অনেকেই উপযুক্ত পেশা খুঁজে পাচ্ছেন না। তাই তাদের দাবি এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা হোক, যাতে শিল্পও টিকে থাকে তারাও জীবিকা নির্বাহ করতে পারে।