ডেক্স অফিস :
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী জেড আই খান পান্না বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নাম দিয়ে যে কার্যকলাপ হচ্ছে তা মেনে নেওয়া যায় না। কোনো মুক্তিযোদ্ধা যদি বুকে হাত দিয়ে। এ সময় হাইকোর্ট বলেন, এই বিষয়টি তো আপিল বিভাগ নিষ্পত্তি করেছেজেড আই খান বলেন, আমি যদি দেখতাম ছাত্ররা নিরাপদে ঘুরতে পারতেছে, স্কুল–কলেজে যেতে পারতেছে, তাহলে আমার কোনো আপত্তি ছিল না। আপত্তি হলো রাতে যখন ব্লক রেইড দেয় একেকটা এলাকায়, ৭১ সালে যেমন হয়েছিল।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে অবিলম্বে মুক্তি দিতে ও আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে আজ সোমবার এসব কথা বলেন তিনি।
সোমবার (২৯ জুলাই) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের বেঞ্চে ওই রিটের ওপর শুনানি হয়।জেড আই খান পান্না বলেন, ৭১ সালে দেখেছি পাক হানাদাররা রাতের বেলা ব্লক রেড দিয়ে খুঁজতো মুক্তিবাহিনী আছে কি না। আজ ২০২৪ সালে আমরা দেখলাম দরজায় দরজায় নক করে খোঁজ করছে ছাত্র আছে কি না? যদি ছাত্র থাকে তাহলে তাদের মোবাইল ফোন চেক করে। এটা কোন আইন আছে? তারা সীমা অতিক্রম করছে।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনির বলেন, এই বক্তব্য পল্টন ময়দানে দেন। জবাবে জেড আই খান পান্না বলেন, আমি পল্টন ময়দানে বক্তব্য দিয়ে এসেছি। আমি রাজাকারগিরি করিনি। এ সময় তিনি আদালতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এই তো সরকারের অবস্থা। বাইরে কি হবে? কোর্টের ভেতরে সরকারের অবস্থা এই। বাইরে কি করে এরা সেটা আমি বলতে চাইনা। ব্লকরেইড দিয়ে যা করে রাতের বেলা এটা কি আইনসঙ্গত? মোটেই না।
রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাসান চৌধুরী বলেন, উনারা কি নিশ্চিত করে বলতে পারবেন বিটিভি–মেট্রোরেলে আর হামলা হবে না? নরসিংদী কারাগারে হামলা করে আসামিদের ছাড়িয়ে নেওয়া হলো। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তখন কি করবে? এসময় আদালত বলেন, নরসিংদীর যে বিষয়টি বলেছেন, সেখানে মিছিলের সময় একটি ছেলে মারা গেছে।
মেহেদী হাসান চৌধুরী বলেন, যতটুকু বেআইনি হয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। সবগুলো তদন্ত করা হবে, হচ্ছে।
মেহেদী হাসান চৌধুরী আরও বলেন, তারা যে ছয় জনের কথা বললেন, আমরা টিভিতে দেখেছি এই ছয়জন ডিবিতে বসে কাটা চামচ দিয়ে খাচ্ছে। এ সময় উপস্থিত আইনজীবীরা উত্তেজিত হয়ে নানা কথা বলতে থাকেন। আদালত বলেন, এগুলো করতে কে বলেছে? কেন করলেন এগুলো? আপনারা জাতিরে লইয়া মশকরা কইরেননা। যাকে ধরে নেন, একটি খাবার টেবিলে বসিয়ে দেন। মেহেদী হাসান চৌধুরী বলেন, ছয়জনের স্বজনরা কেউ কোর্টে আসেননি। এই আবেদনে রুল ইস্যু করা যায় না।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোর্শেদ বলেন, আমরা সময় চাই, অ্যাটর্নি জেনারেল আসুক। আদালত বলেন, আগামীকাল হবে। তখন ব্যারিস্টার অনীক আর হক মৌখিক আদেশ চান।
এ সময় শেখ মোহাম্মদ মোর্শেদ বলেন, দেখতে হবে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর আইনগত এখতিয়ার প্রয়োগে বাধা হচ্ছে কি না। দুদিক থেকেই ইনজুরড হচ্ছে। আর ৬ জনকে (সমন্বয়ক) আটক করা হয়েছে কে বলেছে, কোথায় বলেছে? আদালত বলেন, যদি আটক না করে, দিনের পর দিন রাখেন কিভাবে?
শেখ মোহাম্মদ মোর্শেদ বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ বলেছে তাদেরকে আটক করা হয়েছে? যদি গ্রেপ্তার করা হতো তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে নেওয়া হতো।
পরে এই বিষয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়। এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা রিটটি করেন।