রাজবাড়ী প্রতিনিধি ॥
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে গড়াই নদীর খেয়াঘাটের ইজারাদারের ২ জন সহযোগীকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন, প্রায় ৩৬ বছর ধরে বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের নারুয়া খেয়াঘাট ইজারা নিয়ে মনোরঞ্জন সিকদার সহ ২-৩ জন নদী পারাপার কার্যক্রম করে আসছিল। এ খেয়াঘাট দিয়ে প্রতিদিন রাজবাড়ী, মাগুরা জেলার মানুষ যাতায়াত করে। কয়েক বছর ধরে মনোরঞ্জন সিকদার, শরিফুল ইসলাম ও গোলাম মোস্তফা মিলে খেয়াঘাট পরিচালনা করে আসছেন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে মনোরঞ্জন সিকদারকে ঘাটে রেখে শরিফুল ও মোস্তফাকে ঘাট এলাকায় যেতে দিচ্ছে না একটি মহল। গত রবিবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে বিএনপি’র নাম ভাঙিয়ে একটি চক্র তাদেরকে বিতাড়িত করে। পরে ঘাটে থাকা দু’টি নৌকা শরিফুল ইসলামের হওয়ায় নিয়ে আসে।
ইজারাদারের সহযোগী শরিফুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে মনোরঞ্জন সিকদারের নামে ইজারা গ্রহণ করা হয়। ৩ ভাগে সরকারী অর্থ পরিশোধ করে ঘাট পরিচালনা করে আসছি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে মনোরঞ্জন সিকদারকে ঘাটে রেখে আমাদের যেতে নিষেধ করে। আমার সহযোগী গোলাম মোস্তফা গত রবিবার (১৭ নভেম্বর) ঘাটের টাকা কালেকশনের সময় বিএনপি’র নেতা পরিচয়ে কয়েকজন গিয়ে কালেকশন না করে ঘাট ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়। পরে আমাদের নৌকা নিয়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছি। কিভাবে এখন ঘাট চলছে জানি না। এ বিষয় নিয়ে ইউনিয়ন বিএনপি’র সকল পর্যায়ের নেতাদের কাছে ধর্ণা ধরলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এ অপরাধের বিচারের ভার আল্লাহর নিকট ছেড়ে দিয়েছি।
অপর সহযোগী গোলাম মোস্তফা বলেন, কয়েকজন লোক ঘাটে গিয়ে তাকে আর ঘাটে যেতে নিষেধ করে। তারপর থেকে আমরা ঘাটে যেতে পারছি না। ঘাটে গেলে মারধরের মতো ঘটনা ঘটতে পারে সে আশঙ্কা রয়েছে আমাদের মধ্যে।
নারুয়া খেয়াঘাট ইজারাদার মনোরঞ্জন সিকদার ৩ জন সহযোগী মিলে ঘাট পরিচালনার কথা স্বীকার করে বলেন, আমার কিছু করার নেই। আমাকে ঘাট চালাতে বলেছে, তাই চালাচ্ছি। তবে কাউকে চাঁদা দিতে হচ্ছে কিনা এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।
ইজারাদার মনোরঞ্জন সিকদারের ছেলে রতন সিকদার বলেন, এলাকার লোকজনের চাপের কারণে অপর দুইজন সহযোগী এখানে আসছে না। ঘাটটি আমি চালাচ্ছি। কারা চাপ দিচ্ছে, তা তিনি বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
নারুয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আলমগীর হোসেন মোল্লা বলেন, নারুয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র পদে আছে এরকম কোন লোক ঘাটে গিয়ে তাড়িয়ে দেয়নি। তবে শুনেছি, কিছু লোক বিএনপি’র নাম ভাঙিয়ে ২ জন সহযোগীকে তাড়িয়ে দিয়েছে। তবে বিএনপি নেতাকর্মীদের এমন কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি’র কমিটিতে থাকা কেউ এমন কাজে জড়িত থাকলে তাদেরকে বহিস্কারের জন্য দলের কাছে সুপারিশ করবো।