1. admin@dailylikonisongbad.com : admin :
  2. shakshakil4@gmail.com : Rana : Rana Ahmed
বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
ভোমরায় ট্রাস্টফোর্স অভিযানে ৩ টন রসুন উদ্ধার ও ১ লক্ষ টাকা জরিমানা আজ ১৮ ডিসেম্বর রাজবাড়ী হানাদার মুক্ত দিবস রাজবাড়ীতে মহাসড়কে ডাকাতির চেষ্টা, ১ জন গ্রেপ্তার রাজবাড়ীতে ডিবি পুলিশের অভিযানে বিদেশি মুদ্রাসহ ১ জন গ্রেফতার বিজয় দিবসে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় মাওলানা সৈয়দ শফিউল বারী (রহ.) ইন্তেকাল,শোকপ্রকাশ চুনারুঘাট থেকে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, মামলার প্রধান আসামি আবুল র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার। জুবায়েরপন্থিদের খোলা চিঠি দিয়ে যে আহ্বান জানাল সাদপন্থিরা অবশেষে সকল বাধা পেরিয়ে ৪ জানুয়ারি কুষ্টিয়ার কর্মী সমাবেশে আসছেন আমিরে জামাত লেখক সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ গোলাম মাকসুদ হিলালী এর প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি :

আজ ১০ ডিসেম্বর নড়াইল মুক্ত দিবস।

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৯ বার পঠিত

 

মিনারুজ্জামান মিরন

আজ ১০ ডিসেম্বর নড়াইল মুক্ত দিবস । ১৯৭১ সালের এ দিনে নড়াইলের মুক্তিপাগল দামাল ছেলেরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে সম্মুখ যুদ্ধে পরাজিত করার পর নড়াইল শত্রু মুক্ত হয়।জানা যায়, শহীদ মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণার ডাক দেওয়ার পর অন্যান্য স্থানের মত নড়াইলবাসী পুরোপুরি যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণে উদ্ধুদ্ধ হয়। স্বাধীনতাকামী ছাত্র-জনতা যেকোন কিছুর বিনিময়ে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে মোকাবেলা করার শপথ গ্রহণ করে। ওই সময় নড়াইলের এসডিও’র বাসভবনকে মুক্তিযুদ্ধের স্থানীয় সদর দপ্তর করা হয়েছিল।

এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে তৎকালীন নড়াইলের এসডিও কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী লোহাগড়া হাইস্কুলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও নড়াইলের সংগঠিত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বিশাল বাহিনী গঠন করে যশোর অভিমুখে পাঠিয়ে দেন। ৬ এপ্রিল সকালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী দুটি জেট বিমান হতে নড়াইল শহরের ওপর ব্যাপক মেশিনগানের গুলি ও বোমা নিক্ষেপ করে প্রচুর ক্ষতি সাধন করলে নড়াইল শহর জনমানব শুন্য হয়ে পড়ে।

১৩ এপ্রিল হানাদার বাহিনীর একটি দল নড়াইল শহরের চৌরাস্তায় রেস্টুরেন্ট মালিক মন্টুকে গুলি করে আহত করে। এদিকে লোহাগড়ার ইতনা ও আড়িয়ারায় মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ শিবির খোলার কারনে মধুমতি-নবগঙ্গা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের ভাটিয়াপাড়াস্থ ক্যাম্প হতে পাক হানাদার বাহিনী ২৩ মে গানবোট যোগে ইতনা গ্রামে ঢুকে নৃশংস অভিযান চালিয়ে ওই গ্রামের ৫৮ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করে।

মুক্তিযুদ্ধের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস থেকে জানা যায়, মুক্তিকামী হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে নড়াইলে মুক্তিযোদ্ধাদের শক্ত ঘাঁটি গড়ে ওঠে। বিভিন্ন অঞ্চলে পাকহানাদারবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের চলে তুমুল যুদ্ধ। শুধুমাত্র নড়াইল চিত্রা নদীর পাড়ে (প্রধান ডাকঘরের পার্শে) প্রায় ৩ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী। এছাড়া নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর গ্রামের তরফদার পরিবারের স্কুল শিক্ষক আতিয়ার রহমান তরফদার, আব্দুস সালাম তরফদার, রফিউদ্দিন তরফদার, মাহতাব তরফদার ও আলতাব তরফদার এবং মোকাম মোল্যা, কাইজার মোল্যা ও মকবুল হোসেন শিকদারকে ধরে এনে নড়াইল শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভেতরে গণ-কবর দেয় পাকহানাদার বাহিনী।

বীর মুক্তিযোদ্ধা নড়াইল সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান আলেক বলেন, দেশ হানাদার মুক্ত করার আকাংখা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা নড়াইলে প্রবেশ করেন। অক্টোবর মাস হতে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মুক্তিপাগল মানুষের মনে এক বিশ্বাস জন্মাতে থাকে যে হানাদার বাহিনী আর বেশীদিন টিকতে পারবে না। ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকেই নবগঙ্গা নদীর উত্তর ও পূর্বাঞ্চাল হানাদার মুক্ত হয়ে যায়। মুক্তি বাহিনীর কমান্ডাররা লোহাগড়া থানার পাক হানাদার বাহিনীরকে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পনের নির্দেশ দিলে তারা আত্নসমর্পন করেনি। ৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি গ্রুপ একত্রিত হয়ে সম্মিলিত ভাবে লোহাগড়া থানা আক্রমণ করলে প্রচন্ড যুদ্ধের পর হানাদার বাহিনীর সদস্যরা আত্মসমর্পন করে। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা নড়াইলে হানাদার বাহিনীর ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। ৯ ডিসেম্বর বিজয়ের তীব্র আকাঙ্খা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা নড়াইল সরকারী ভিক্টোরিয়া কলেজের দক্ষিণ দিক থেকে আক্রমণ চালানোর পর হানাদারবাহিনীর পাল্টা আক্রমণে বাগডাঙ্গা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান শহীদ হন। ওই দিনই শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাংলোতে অবস্থানরত ৪০ জন পাক মিলিটারিকে মুক্তিযোদ্ধারা আত্মসমর্পনের নির্দেশ দিলে তারা আত্মসমর্পনে অস্বীকৃতি জানান। এসময় মুক্তি বাহিনীর সদস্যরা চর্তুদিক থেকে প্রচন্ড গোলাবর্ষণ শুরু করলে পাক মিলিটারিরা আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়। এখানে একজন পাক মিলিটারি নিহত হয় এবং অন্যদের জেল হাজতে পাঠানো হয়। শীতের রাতে প্রবল শীতকে উপেক্ষা করে মুক্তিযোদ্ধারা সারা রাত শহরে বিজয় উল্লাস করতে থাকেন স্লোগানে স্লোগানে শহর প্রকম্পিত করে তোলেন এবং ১০ ডিসেম্বর দুপুর একটা ১৫ মিনিটে নড়াইলকে পাক হানাদার মুক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে ডাকবাংলো প্রঙ্গনে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

এদিকে নড়াইল মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও দোয়া অনুষ্ঠান এবং আলোচনা সভা হয়।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ দৈনিক লিখনী সংবাদ
Theme Customized By Shakil IT Park